কোর্টরুম ড্রামা বা লিগ্যাল ফিল্ম বলতে আসলে কি বোঝায়?
আদালত, আইনজীবি, বিচারক বা জুরিদের কেন্দ্র করে যে মুভিগুলো ঘুরপাক খায়, সেগুলোই কোর্টরুম ড্রামা। এই জনরাটি প্রচলিত আর দশরকম মুভির চেয়ে একটু ভিন্ন, কিছুটা যেন ‘স্লো’ বা সোজা বাংলায়, ‘বোরিং’। তবে মানতেই হবে, একবার এই মুভির ভেতর ঢুকে যেতে পারলে, নিঃশ্বাস আটকে আসা উত্তেজনা আর উৎকণ্ঠা পুরোপুরি পেয়ে বসবে। অনেক ক্ষেত্রেই কোর্টরুম ড্রামাগুলো হয় থ্রিলারের মত, কিছু কিছু ক্ষেত্রে শুধুই ড্রামা। আর অনেক ক্ষেত্রেই এই মুভিগুলো কোন এক সত্যি ঘটনার ছায়ায় তৈরি করা হয়, যার ফলে এর আবেদন বেড়ে যায় আরও অনেক বেশি।
কোর্টরুম ড্রামা বা লিগ্যাল মুভিগুলোর অনেক ধরণের লিস্ট আমরা পাই; বেশ কিছু জায়গায় আদালত, আইনজীবিদের প্রশিক্ষণ এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে পর্যন্ত এইসব মুভিগুলো স্থান করে নিয়েছে। আরেকটা মজার ব্যাপার হচ্ছে, কোর্টরুম ড্রামার বেশিরভাগ শ্রেষ্ঠ মুভিই কিন্তু ক্লাসিক, অর্থাৎ ৪০-৫০ বছর পুরনো মুভি; অথচ তার ধার এবং আবেদন আজকেও সেই আগের মতই !
আমি কোর্টরুম ড্রামা দেখেছি অনেক, তবে মনে দাগ কেটে গিয়েছে যে দশটি সেটাই লিখলাম।
১০) ও মাই গড – OMG – OH MY GOD (2012)
IMDb Rating – 8.2
Recognition – Best Hindi Film by Institute for Research and Documentation in Social Sciences (IRDS) & Best Adapted Screenplay in 60th National Film Awards
বলিউডের ব্লকবাস্টার এই মুভিটাকে কোর্টরুম ড্রামার তালিকায় দেখলে অবশ্য ভ্রু কুঁচকানো স্বাভাবিক। অসাধারণ বুদ্ধিদীপ্ত এই রিলিজিয়াস স্যাটায়ার মূলত মানুষের বিশ্বাস নিয়ে খেলা করা কিছু লোকের মুখোশ উন্মোচনকারী একটি চিত্রপট যার পটভূমি ছিল আদালত, এবং এই আদালতে আসামী ছিলেন স্বয়ং ঈশ্বর।
কাঞ্জিলাল মেহতা ওরফে কাঞ্জিভাই একজন ‘ধর্মব্যবসায়ী’, অর্থাৎ ধর্মের পথে সাধনা করতে যা যা প্রয়োজন, সবকিছুর যোগান দেয় সে। আকস্মিক এক ভূমিকম্পে তার দোকান ধ্বংস হয়ে যাবার পর সে ইন্স্যুরেন্সের কাছ থেকে ফিরে আসে প্রত্যাখ্যাত হয়ে, কারণ ভূমিকম্পের মত প্রাকৃতিক দুর্যোগ হচ্ছে Act of God, এখানে মানুষের কিছু করার নাই, আইনের হাত সে পর্যন্ত পৌঁছে না। রাগে দুঃখে কাঞ্জিভাই শেষ পর্যন্ত ঈশ্বরের বিরুদ্ধে মামলা করে। সেই মামলা আদালত মঞ্জুরও করেন, এবং এরপর শ্বাসরুদ্ধকর ঘটনা আর দম ফাটানো কমেডীতে বেরিয়ে আসতে থাকে প্রকৃত ধর্মব্যবসায়ীদের চেহারা। আর এই পুরো কাজে তাকে সবরকম সহায়তা করেন…… না থাক। মুভিটা দেখে নিন।
ডাউনলোড লিংক – OMG – OH MY GOD
৯) অ্যামিস্টাড – Amistad (1997)
IMDb Rating – 8.2; Rotten Tomatoes – 75%
Recognition – Nominated for 4 Oscars, 4 Golden Globes, Another 9 wins & 32 nominations. Roger Ebert gave this move 3/4 rating.
একই মুভিতে মরগ্যান ফ্রিম্যান, ম্যাথু ম্যাককনোহে, অ্যান্থনী হপকিন্স, জিমন হনসু যদি থাকেন, এবং তা যদি হয় স্টিভেন স্পিলবার্গের পরিচালনা, তবে সেটা কোন মাত্রার শিল্পে রূপ নেয় তা আর বলা লাগে না। এটি মূলত একটি ড্রামা, দাসপ্রথার বীভৎসতম দিকগুলোকে ফুটিয়ে ওঠানো হয়েছে খুব জীবন্তভাবে।
১৮৩৯ সালে কিউবা থেকে আমেরিকা আসছিল আফ্রিকান ক্রীতদাসবাহী একটি জাহাজ অ্যামিস্টাড। জাহাজে দাসব্যবসায়ীদের নির্মম অত্যাচার নৃশংসতার মধ্যে সিংকে নামের এক দাসের নেতৃত্বে তারা বিদ্রোহ করে এবং সকল দাসব্যবসায়ীকে হত্যা করে ফেলে; কিন্তু এরপর তারা মার্কিন উপকূলে ধরা পড়ে, এবং পলাতক ও হত্যাকারী দাস হিসেবে তাদের বিচার শুরু হয়। টাপান এবং জোডসন নামক দুইজন উদার সহানূভূতিশীল ব্যক্তি তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসেন, তারা বল্ডউইন নামের একজন তরুণ পাগলাটে আইনজীবির মাধ্যমে তাদের মুক্তির জন্য আইনী লড়াই শুরু করেন। প্রাথমিক আদালত দাসদের পক্ষে রায় দিলেও দাসপ্রথার পক্ষের বিভিন্ন স্তরের মানুষের চাপে মামলাটি সুপ্রীম কোর্টে ওঠে, যেখানকার নয় জন বিচারকের বেশিরভাগই ছিলেন ক্রীতদাসের মালিক। টান টান উত্তেজনা আর নাটকীয়তার মাঝে আদালতে হাজিরা দেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জন কিউ অ্যাডামস, একজন প্রাজ্ঞ আইনজীবি হিসেবে। আস্তে আস্তে খুলতে থাকে জট, কিন্তু মুভির শেষ প্রান্তে এসে যেন দীর্ঘশ্বাস রয়েই যায়।
ডাউনলোড লিংক – Amistad (1997)
৮) ক্রেমার ভার্সেস ক্রেমার – Kramer vs. Kramer (1979)
IMDb Rating – 8.2; Rotten Tomatoes – 88%
Recognition – Won 5 Oscars. Another 38 wins & 17 nominations. Roger Ebert gave this move 4/4 rating.
ডাস্টিন হফম্যান এবং মেরিল স্ট্রীপ অভিনীত অসাধারণ একটা মুভি। তবে কোর্টরুম ড্রামা বলা হলেও এখানে অবশ্য কোর্ট সীন খুবই সামান্য, হৃদয়স্পর্শী ড্রামার অংশই বেশি। টেড ক্রেমার কোন এক দিন কাজ সেরে বাড়ি ফিরে জানতে পারে, তার স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যাচ্ছে, যদিও একমাত্র ছেলেটিকে বাবার হাতেই ছেড়ে যায় সে। এরপরের বেশিরভাগ সময়টাতে টেড অর্থাৎ ডাস্টিন হফম্যান কিভাবে তার ছেলেকে মায়ের অভাব বুঝতে না দিয়ে বড় করতে চেষ্টা করে সেই গল্পই মুভিতে দেখানো হয়। এরপর এক পর্যায়ে জোয়ানা ক্রেমার, অর্থাৎ তার মা ফিরে আসে ছেলের অভিভাবকত্বের দাবী নিয়ে, এই নিয়ে মামলা গড়ায় কোর্টে। এই মুভিটি প্রায় সকল কোর্টরুম ড্রামার লিস্টে টপ টেনে স্থান করে আছে।
ডাউনলোড লিংক – Kramer vs. Kramer (1979)
৭) ইনহেরিট দ্যা উইন্ড – Inherit The Wind (1960)
IMDb Rating – 8.11; Rotten Tomatoes – 90%
Recognition – Nominated for 4 Oscars. Another 3 wins & 7 nominations. Roger Ebert gave this move 4/4 rating.
ধর্মের সাথে বিজ্ঞানের সেই পুরনো টক্করের বিচারিক রূপ ইনহেরিট দ্যা উইন্ড। স্ট্যানলী ক্রেমারের পরিচালনায় ১৯২৫ সালের দ্যা মাংকি ট্রায়াল নামের একটি সত্য মামলার ছায়ায় এই মুভিটি তৈরি। স্কুলের ক্লাসে ডারউইনের থিওরী অফ ইভোলুশন বা বিবর্তনবাদ পড়ানোর অভিযোগে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। চাঞ্চল্যকর এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবি ছিলেন একজন রাজনীতিবিদ এবং বাইবেল বিশেষজ্ঞ। অপর দিকে একটি পত্রিকার নিজস্ব উদ্যোগে শিক্ষকের পক্ষে মামলা পরিচালনার জন্য শহরে আসেন আরেক বিখ্যাত আইনজীবি। ডারউইনের তত্ত্বের উপর বিশেষজ্ঞ হিসেবে বিজ্ঞানের অধ্যাপকদেরকে সাক্ষী হিসেবে দাঁড় করাতে চেয়েও বিচারকের নিষেধাজ্ঞায় ব্যার্থ হয়ে আসামী পক্ষের আইনজীবি শেষে আর কোন উপায় না দেখে বাইবেল বিশেষজ্ঞ প্রসিকিউশনের আইনজীবিকেই সাক্ষী হিসেবে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। এরপর কি দাঁড়ায় ঘটনা ?
ডাউনলোড লিংক – Inherit The Wind (1960)
৬) উইটনেস ফর দ্যা প্রসিকিউশন – Witness For The Prosecution (1957)
IMDb Rating – 8.4; Rotten Tomatoes – 100%
Recognition – Nominated for 6 Oscars. Another 4 wins & 8 nominations.
আগাথা ক্রিস্টির কাহিনীতে দুর্দান্ত এক থ্রিলার উইটনেস ফর দ্যা প্রসিকিউশন। ধাপে ধাপে রহস্য, নাটকীয়তা আর চমকের সাথে বুদ্ধিদীপ্ত কমেডি, সব মিলিয়ে দুর্দান্ত একটি মুভি। যুদ্ধ ফেরত এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে এক বিধবা ধনী ভদ্রমহিলাকে খুনের অভিযোগে বিচারকার্য শুরু হয়। সেই অভিযুক্ত ব্যক্তি আবার নিহত মহিলার রেখে যাওয়া বিপুল সম্পত্তির উত্তরাধিকারীও বটে। প্রাথমিক সাক্ষ্য-প্রমাণে তাকেই খুনী বলে মনে হতে থাকে। কিন্তু ঘটনা মোড় নেয় যখন তার স্ত্রী স্বয়ং “উইটনেস ফর দ্যা প্রসিকিউশন” তথা রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী হিসেবে স্বামীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য হাজির হয়। শুরু হয় রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনা, বেরিয়ে আসতে থাকে নতুন নতুন তথ্য। মুভির শেষটা বেশ অনাকাঙ্খিত। সেটা কি? জানতে হলে দেখতে হবে!
ডাউনলোড লিংক – Witness For The Prosecution (1957)
৫) এ ফিউ গুড মেন – A Few Good Men (1992)
IMDb Rating – 7.6; Rotten Tomatoes – 83%
Recognition – Nominated for 4 Oscars. Another 10 wins & 15 nominations.
দুই মেরিন সৈন্যের বিরুদ্ধে আরেকজন মেরিন সৈন্যকে হত্যা করার অভিযোগে কোর্ট মার্শাল গঠন করা হয়। তাদের পক্ষের উকিল হিসেবে নিয়োগ পান লেফটেন্যান্ট কাফি এবং কমান্ডার গ্যালওয়ে। জিজ্ঞাসাবাদে এবং তদন্তে বেরিয়ে আসতে থাকে যে, মেরিন সৈন্য দুজন আসলে তাদের প্রধান কর্ণেল নাথান জেসাপের আদেশ পালন করেছেন মাত্র। তিনি তাদেরকে ‘কোড রেড’, অর্থাৎ সিনিয়র অফিসারদের নির্দেশে কিছু মেরিন কর্তৃক অন্য মেরিনকে শারিরীক শাস্তি দেবার জন্য অর্ডার দিয়েছিলেন।
সমস্যা হচ্ছে একটিই – কর্ণেল নাথান যে কোড রেডের অর্ডার দিয়েছিলেন, তার কোন সাক্ষী প্রমাণ নেই। লেফটেন্যান্ট কাফি বিভিন্ন বুদ্ধিদীপ্ত যুক্তি আর অসাধারণ দক্ষতায় জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে স্বয়ং কর্ণেলের মুখ থেকে স্বীকারোক্তি আদায়ের উদ্যোগ নেয়। টম ক্রুজ, ডেমি মুর আর কর্নেলের চরিত্রে জ্যাক নিকলসনের অসাধারণ অভিনয়ের জন্য হলেও মুভিটি দেখা প্রয়োজন ।
ডাউনলোড লিংক – A Few Good Men (1992)
৪) জাজমেন্ট অ্যাট ন্যুরেমবার্গ – Judgment At Nuremberg (1961)
IMDb Rating – 8.3; Rotten Tomatoes – 89%
Recognition – Won 2 Oscars. Another 17 wins & 21 nominations.
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৪৭ সালে জার্মানির নুরেমবার্গে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে সেইসব জার্মান বিচারকদের বিচারকার্য শুরু হয়, যারা তথাকথিত বিভিন্ন অপরাধের শাস্তি হিসেবে অভিযুক্তদেরকে কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে পাঠাতেন। হুবহু সত্য ঘটনা নয়, বরং সত্য ঘটনার ছায়া অবলম্বনে তৈরি এই মুভিটিতে নুরেমবার্গ ট্রায়ালের বিষয়টিই উঠে এসেছে। বাস্তবের মতোই মুভিতেও চারজন বিচারককে কাঠগড়ায় তোলা হয়, তবে মুভির এই চার বিচারকের চরিত্রগুলো কাল্পনিক। বিচার করার জন্য প্রধান বিচারক হিসেবে নুরেমবার্গে আসেন মার্কিন বিচারক ডেন হেয়উড (স্পেনসার ট্রেসি)।
মুভিতে শুধুমাত্র কোর্টরুমের তর্ক-বিতর্কই দেখানো হয়নি, বরং সেই সাথে উঠে এসেছে যুদ্ধকালীন এবং যুদ্ধপরবর্তী জার্মানির সামাজিক বাস্তবতার কিছু খন্ড চিত্র। সেই সাথে আরো যুক্ত হয়েছে এই বিচারকে মার্কিন স্বার্থে রাজনীতিকরণের উদ্দেশ্যে বিচারককে প্রভাবিত করার প্রচেষ্টা। মুভিতে হলোকাস্টের উপর সত্যিকার একটা ফুটেজও দেখানো হয়। সব মিলিয়ে বিশ্বে তোলপাড় ওঠানো এই ঘটনাটির চলচ্চিত্রায়নও মনে দাগ কেটে যায়।
ডাউনলোড লিংক – Judgment At Nuremberg (1961)
৩) অ্যানাটমি অফ এ মার্ডার – Anatomy Of A Murder (1959)
IMDb Rating – 8.1; Rotten Tomatoes – 100%
Recognition – Nominated for 7 Oscars. Another 9 wins & 11 nominations.
কোর্টরুমের ভেতর সাক্ষীদের জেরা পাল্টা জেরা, পক্ষ এবং বিপক্ষের অ্যাটর্নিদের যুক্তি পাল্টা যুক্তি প্রভৃতির একেবারে আদর্শ চিত্রায়ন হল অ্যানাটমি অফ এ মার্ডার। সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত এই মুভিটিকে অনেক আইনের অধ্যাপক সেরা এবং সবচেয়ে নিঁখুত ট্রায়াল মুভি হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
এক আর্মি লেফটেন্যান্ট এক বারটেন্ডারকে খুনের দায়ে গ্রেপ্তার হয়। আসামীর দাবি বারটেন্ডার তার স্ত্রীকে ধর্ষণ এবং নির্যাতন করেছিল। কিন্তু এদিকে আবার বিপক্ষের উকিলকে পাল্টা সুযোগ তৈরি করে দেয় আসামীর স্ত্রীর আচরণ – তার উগ্র পোশাক-আশাক এবং পরপুরুষদের সাথে ঘনিষ্ঠতা। তারা প্রমাণ করতে চেষ্টা করে, বারটেন্ডারটি ছিল স্ত্রীটির প্রেমিক, এবং এ ঘটনা জানতে পেরেই লেফটেন্যান্ট তার স্ত্রীকে প্রহার করে এবং বারটেন্ডারকে খুন করে। দুই পক্ষের অসাধারণ যুক্তি-পাল্টা যুক্তি, উপস্থিত বুদ্ধি দ্বারা সাক্ষীদের জেরার মাধ্যমে এগিয়ে যেতে থাকে শ্বাসরুদ্ধকর এই মুভিটির কাহিনী।
ডাউনলোড লিংক – Anatomy Of A Murder (1959)
২) টু কিল এ মকিংবার্ড – To Kill A Mockingbird (1962)
IMDb Rating – 8.4; Rotten Tomatoes – 94%
Recognition – Won 3 Oscars. Another 14 wins & 12 nominations.
হারপার লি এর পুলিত্জার জয়ী উপন্যাস অবলম্বনে তৈরি এই মুভিটা সর্বকালের সেরা মুভির বিভিন্ন তালিকায় সবসময়েই স্থান করে নেয়, আর সেরা কোর্টরুম ড্রামার তালিকায় এটি প্রথম বা দ্বিতীয় অবস্থানে থাকবেই।
অ্যাটিকাস ফিঞ্চ একজন আইনজীবি, যিনি বর্ণবাদ এবং কুসংস্কারে আচ্ছন্ন জনমতের বিরুদ্ধে গিয়ে ধর্ষনের অভিযোগে অভিযুক্ত নির্দোষ এক কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তির পক্ষে আদালতে লড়ার সিদ্ধান্ত নেন। তার কৌতূহলী দুই ছোট ছেলে মেয়ে এবং তাদের প্রতিবেশী এক ছোট ছেলে প্রায়ই চুপি চুপি কোর্টে গিয়ে শুনানী শুনে আসে। এদিকে তাদের এলাকায় বাস করে এক মানসিক প্রতিবন্ধী যুবক, যাকে নিয়ে পুরো এলাকায় বিভিন্ন ভয়ঙ্কর কল্পিত কাহিনী চালু আছে। এলাকার সব ছোট ছেলে মেয়েরা তাকে ভয় পেলেও অ্যাটিকাসের ছেলে-মেয়ে এবং তাদের বন্ধু কৌতুহল বশে রাতের বেলা সেই বাড়ির আশেপাশে উঁকিঝুকি মারা চেষ্টা করে। ছোট শহর হওয়ায় বিচারকার্য কোর্টের বাইরেও আলোড়ন সৃষ্টি করে, বর্ণবাদী লোকজনের সহিংসতার সাথে সাথে অনাকাঙ্খিক ঘটনায় জড়িয়ে পড়ে ছেলে মেয়েগুলো এবং প্রতিবন্ধী যুবকটা।
এই মুভির অ্যাটিকাস ফিঞ্চ চরিত্রে গ্রেগরী পেকের অভিনয় কিংবদন্তীর পর্যায়ে চলে যায়। ২০০৩ সালে তৈরি American Film Institute (AFI) এর ১00 গ্রেটেস্ট মুভি হিরোর তালিকায় গ্রেগরী পেক অভিনীত অ্যাটিকাস ফিঞ্চ চরিত্রটি প্রথম স্থান অধিকার করে।
ডাউনলোড লিংক – To Kill A Mockingbird (1962)
১) টুয়েল্ভ অ্যাংরি মেন – 12 Angry Men (1957)
IMDb Rating – 8.9; Rotten Tomatoes – 100%
Recognition – Nominated for 3 Oscars. Another 18 wins & 6 nominations. Roger Ebert listed it as one of his “Great Movies”.
সিডনী লুমের পরিচালনায় অসাধারণ একটি কোর্টরুম ড্রামা, আমার দেখা অন্যতম সেরা একটি মুভি। এই মুভির সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, শুরু এবং শেষে মোট ৩ মিনিট বাদে ৯৬ মিনিটের পুরো মুভিটাই একটা ষোল বাই চব্বিশ ফিটের জুরি রুমের মধ্যে শূট করা হয়, এবং পুরো কাহিনীটাই আবর্তিত হয় জুরি রুমে ১২ জন জুরির তর্ক-বিতর্কের মধ্য দিয়ে।
পিতৃহত্যার দায়ে অভিযুক্ত এক কিশোরের বিচারের শুনানী শেষে জুরিরুমে জুরিবোর্ডের ১২ সদস্য আলোচনায় বসে ছেলেটি দোষী না নির্দোষ সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য। শুনানীতে যেহেতু তার অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত, তাই প্রথমে সবাই পুরাপুরি নিশ্চিত থাকে ছেলেটা দোষী এবং তার একমাত্র শাস্তি হওয়া উচিত মৃত্যুদন্ড। তবে ভোট নেবার সময় সাত নম্বর জুরি হেনরি ফন্ডা উঠে দাঁড়ায় এবং ছেলেটির মৃত্যুপরোয়ানা নিশ্চিত করার আগে অন্তত খানিকটা আলোচনা করার আহ্বান জানায়।
শুরু হয় শ্বাসরুদ্ধকর আলোচনা। একের পর এক বেরিয়ে আসতে থাকে অবিশ্বাস্য সব তথ্য – ঘটনাপ্রবাহের অযৌক্তিকতা এবং সাক্ষীদের বক্তব্যে অসামঞ্জস্যতা। সেই সাথে যুক্ত হয় ১২ জুরির ১২ রকম মত, সত্য নির্ণয়ের চেয়ে প্রধান হয়ে উঠতে থাকে জুরিদের ব্যক্তিগত ইগো আর তাদের জীবন-শৈশবের অভিজ্ঞতা।
পরিচালকের অসাধারণ দক্ষতায় আর চমত্কার ক্যামেরা টেকনিকে দর্শকের পক্ষে চোখের পলক ফেলা কঠিন হয়ে পড়ে। শুধুমাত্র ১২ জন মানুষের বকবকানি নিয়ে মাত্র একটি ছোট রুমের মধ্যে শূট করা সাদাকালোতে চিত্রায়িত একটি মুভি যে এরকম অসাধারণ হতে পারে, সেটা যে না দেখবে তার পক্ষে কল্পনাও করা সম্ভব না।
নতুন পরিচালকদের জন্যে সাজেশন হিসেবে স্টিভেন স্পিলবার্গ ১৫০টি মুভির নাম দিয়েছিলেন, যার মধ্যে শীর্ষে আছে এই মুভিটি। আইনের তুখোড় বিশ্লেষণ, মানবিক এবং পারিপার্শ্বিক বিষয়গুলো কিভাবে মানুষের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে তার এক অসাধারণ চিত্রপট এই মুভি।
ডাউনলোড লিংক – 12 Angry Men (1957)