They say it’s just physical abuse but it’s more than that, this was spiritual abuse. You know why I went along with everything? Because priests, are supposed to be the good guys.
প্রতিটা দেশ, সমাজেই কিছু স্পর্শকাতর বিষয় থাকে, প্রদীপের নিচে অন্ধকার থাকে যা কেউই সামনে নিয়ে আসতে চান না। সাহস করে কেউ এগিয়ে এসে ভদ্রতা এবং সভ্যতার চাঁদর ওঠালেই নিচে দেখা যায় পচনের মাত্রা, কোন পর্যন্ত তা পৌছে গেছে তা ভেবে অবাক হতে হয়।
২০০২ সালে বিখ্যাত মার্কিন পত্রিকা বোস্টন গ্লোবে নতুন সম্পাদক হিসেবে যোগদান করেই সাংবাদিক মার্টি ব্যারন একটি পুরনো কলাম খুঁজে পান, যেখানে একজন আইনজীবির বরাত দিয়ে চার্চের একজন যাজকের ওপর শিশু নিপীড়নের অভিযোগ আনা হয়। তার অনুরোধে পত্রিকাটির বিখ্যাত ইনভেস্টিগেটিভ টিম ‘স্পটলাইট’ কাজ শুরু করে ক্যাথলিক চার্চের কিছু যাজকদের যৌন নিপীড়ন নিয়ে, যার ভিকটিমদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিল শিশু (ছেলে এবং মেয়ে)। সাংবাদিকেরা তদন্ত করতে গিয়ে বেরিয়ে আসে ভয়াবহ ও চাঞ্চল্যকর তথ্য; একজন যাজক সম্পর্কে জানতে গিয়ে বেরিয়ে আসে ১৩ জন যাজকের বিরুদ্ধে অভিযোগের কথা, এবং ঘটনাপ্রবাহের আলোকে এবং নিবেদিতপ্রাণ সাংবাদিক দল এবং ঐ আইনজীবির প্রচেষ্টায় বেরিয়ে আসে এক ভয়াবহ চিত্র, পুরো চার্চ ব্যবস্থাটির রন্ধ্রে রন্ধ্রেই শিশুদের ওপর যৌন নিপীড়নের চিত্র খুঁজে পান তারা।
২০০৩ সালে এ ধরনের প্রায় ৬০০টি ঘটনার রিপোর্ট আসার পর একপর্যায়ে বোস্টনের ক্যাথলিক চার্চের কার্ডিনাল স্বয়ং পদত্যাগ করেন, অসংখ্য শিশু রক্ষা পায় শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতনের হাত থেকে। ২০১৫ সালের অস্কারে সেরা চলচ্চিত্রের পুরস্কার জেতা মুভি ‘স্পটলাইট’ জীবন্তভাবে তুলে এনেছে সত্যিকার এই ঘটনাটিকে, তারকা সম্বলিত এনসেম্বল কাস্টের অসাধারণ অভিনয় এবং রুদ্ধশ্বাস ঘটনাপ্রবাহের আলোকে আপনি নিজেকেও স্পটলাইট টিমের একজন সদস্য ভাবতে পারেন। কোন ধরনের অ্যাকশন ছাড়া স্রেফ কাহিনী এবং সংলাপনির্ভর এই মুভিটি পুরো রানটাইমের ২ ঘন্টা ৬ মিনিট সময় আপনাকে টেনে ধরে রাখবে।
সিনেমায় যে ইস্যুটির উপর ফোকাস করা হয়েছে তা খুবই সেনসেটিভ ইস্যু, এ কারণেই খুবই সতর্কভাবে অগ্রসর হয়েছিলেন স্পটলাইট টিম, এবং একইভাবে মুভির পরিচালক টম ম্যাকার্থিও ছিলেন সদাসতর্ক। একে তো শিশুদের ওপর যৌন নির্যাতন, তার সাথে আছে অবাক করা সংখ্যক ক্যাথলিক ধর্মযাজকদের নাম। স্পটলাইট টিম একজন ইনসাইডারের কাছ থেকে কিছু গোপন তথ্য লাভ করেন, যা বলছে যে সমগ্র বিশ্বের চার্চের যাজকদের মধ্যে অন্তত ৬% সদস্য এইধরণের অপরাধের সাথে জড়িত। এর সাথে সাথে সাংবাদিক, ভিকটিম এবং আইনিজীবিদের মানবিক দিকগুলো, বিশেষ করে এইধরনের ঘটনা হ্যান্ডেল করা, তা সে লড়াই হোক কিংবা ধামাচাপা দেয়া হোক – টম ম্যাকার্থি জীবন্তভাবে পর্দায় ফুটিয়ে তুলেছেন মানসিক টানাপোড়েনের চিত্রগুলো।
মুভিটিতে যে বিষয়টি আমাকে আলোড়িত করে, তা হলো সত্যিকারের অনুসন্ধিৎসা এবং সমাজের ক্ষত সারানোর জন্য কিভাবে কার্যকর ভূমিকা নিতে হয়, তা তুলে আনবার এক অনবদ্য প্রচেষ্টা। শিশু নির্যাতনের কিছু অভিযোগ একেবারে ষাটের দশক থেকে গুঞ্জণে সীমাবদ্ধ ছিল, আর বছরের পর বছর সব জেনেও ক্যাথলিক চার্চ ব্যাপারটাকে কৌশলে ধামাচাপা দিয়ে গিয়েছে। পুরো সিস্টেমের বিরুদ্ধেই দাঁড়ানোর মত সাহস এবং কৌশল যেভাবে সাংবাদিকেরা নিয়েছিলেন, তা সত্যিই অসাধারণ। আর এই সামগ্রিক কাজের জন্যেই ২০০৩ সালে বোস্টন গ্লোব পত্রিকার এই স্পটলাইট দল পুলিৎজার পুরষ্কার লাভ করেছিলেন। আলোড়ন তৈরি করা ‘হিট নিউজ’ এর সাথে পরিবর্তন নিয়ে আসা নিউজের কি ব্যবধান, তা পরিস্কার হয়ে গিয়েছিল সম্পাদক ব্যারনের এক কথাতেই – If we do this, we’d got into the same cat-fight that made a lot of noise, but changed nothing.
এক নজরেঃ স্পটলাইট (২০১৫)
- জনরাঃ বায়োগ্রাফি এবং ড্রামা
- রটেন টম্যাটোসঃ ৯৬% ফ্রেশ
- আইএমডিবি রেটিংঃ ৮.২/১০
- কাহিনী ও চিত্রনাট্যঃ জশ সিঙ্গার এবং টম ম্যাককার্থি
- পরিচালনাঃ টম ম্যাকার্থি
- অভিনয়ঃ মার্ক রাফেলো, মাইকেল কিটন, র্যাচেল ম্যাকঅ্যাডামস, লিয়েভ শ্রিবার, জন স্ল্যাটারি, ব্রায়ান ডি’আর্চি জেমস এবং স্ট্যানলি টুচি।
অভিনেতাদের মধ্যে সাংবাদিকে মাইক রেজেন্দেস এর চরিত্রে মার্ক রাফালো দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন, যার দরুন পেয়েছেন অস্কারে বেস্ট সাপোর্টিং এক্টর এর নমিনেশন। স্পটলাইট টিম লিডার ওয়াল্টার ‘রবি’ রবিনসন হিসেবে মাইকেল কিটনও দারুন অভিনয় করেছেন। গ্লোব সম্পাদকের চরিত্রে লিয়েভ শ্রিবারের মাথা ঠান্ডা গাম্ভীর্য, আর লড়াকু পাগলাটে আইনজীবি হিসেবে স্ট্যানলি টুচির অংশগুলো ছিলো খুবই মানানসই। স্পটলাইট টিমের একমাত্র নারী সদস্য সাশা’র চরিত্রে র্যাচেল ম্যাকঅ্যাডামস ছিলেন দুর্দান্ত, তিনিও অস্কারে বেস্ট সাপোর্টিং একট্রেস এর নমিনেশন পেয়েছিলেন।
“We need to focus on the institution, not the individual priests. Practice and policy; show me the church manipulated the system so that these guys wouldn’t have to face charges, show me they put those same priests back into parishes time and time again. Show me this was systemic, that it came from the top, down“
– Marty Barron (Editor, The Boston Globe)
সিনেমাটি মূলত বায়োগ্রাফিক্যাল ড্রামা হলেও টানটান উত্তেজনার আর ঘটনার আবর্তন সবময়ই উৎসুক রাখে দর্শকদের, নিজেকেও আপনি ভাবতে পারেন স্পটলাইট টিমের একজন অনুসন্ধিৎসু সদস্য।
সম্ভবত এখানেই মুভিটা সফল।
ট্রেইলার দেখে নিন এখানে
যা হোক, সমগ্র সিস্টেমকে টার্গেট করে মুভির সম্ভবত সেরা ডায়ালগটি আসে আইনজীবি মিচেল গ্যারবিডিয়েনের জবানীতেই –
Mitchell Garabedian: If it takes a village to raise a child, it takes a village to abuse one.